বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান এই তিনটি দেশে বিয়ে নিয়ে জনপ্রিয় প্রবাদ ‘শাদী দিল্লিকা লাড্ডু জো খায়েগা ওবি পস্তায়েগা জো নেহি খায়েগা ওবি পস্তায়েগা’ এই প্রবাদটি জানেনা এমন পাবলিকের সংখ্যা খুবই কম।ইদানিং আমারও ইচ্ছা হচ্ছে দিল্লিকা লাড্ডু খাওয়ার।কিন্তু সাধ থাকলেই কি সাধ্য হয়?দিল্লীকা লাড্ডু খাওয়ার জন্য যোগ্যতার প্রয়োজন আছে।গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইনমতে ছেলেরা ২১+ হলেই বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়।ছেলেরা ২১+ হলেই কি বিয়ের উপযুক্ত হয়ে যায়?? উহুঁ!আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া বার্তায় যেমন বিশ্বাস করিনা, তেমনি ২১+ হলেই ছেলেরা বিয়ের উপযুক্ত হয় এই নীতিতে বিশ্বাস করিনা।বিয়ে করতে অনেক যোগ্যতারই দরকার হয়।বিশ্বাস না হলে আপনার বিবাহিত বন্ধুদের/পরিচিতদের কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।আচ্ছা তার আর দরকার নেই।বিয়ে নিয়ে এত ক্যাচাল যখন করেই ফেলেছি তখন আমিই বলে দেয় আপনি দিল্লিকা লাড্ডু খাওয়ার উপযুক্ত হয়েছেন কিনা মানে আপনি বিয়ে করার উপযুক্ত হয়েছেন কিনা।
১.একটা সময় প্রবাদ ছিল মাছের রাজা ইলিশ জামাইর রাজা পুলিশ।কিন্তু এখন যুগ পাল্টেছে।আগে পুলিশ দেখলে মানুষ ভয়ে পালাত এখন পুলিশ দেখলে মানুষ উল্টা ইট পাটকেল ছুড়েঁ মারে।পাবলিকের মন থেকে পুলিশ অবস্থান হারানোর পাশাপাশি বিয়ের বাজারেও নিজেদেও অবস্থান হারিয়েছে।বর্তমান বিয়ের বাজারে অভিবাবক থেকে কন্যাদের প্রথম পছন্দ।
ক.. RAB
খ..রাজউক কর্মকর্তা ।
গ..ব্যাংকার ।
ঘ..ঘুসে ভরপুর কোন সরকারী দপ্তরের সচিব,আমলা।
২.আমাদের সরকারগুলো চায় বিদেশী প্রভুদের গোলাম আর বিয়ের পর ললনারা চায় স্বামীকে গোলাম করে রাখতে।গৃহপালিত বিড়াল যেমন মনিবের ধমকেও মাথা নিচু করে ম্যাওঁ ম্যাওঁ করে আজকাল ললনারাও চায় বিয়ের পর স্বামী গৃহপালিত বিড়ালের মত হয়ে থাকুক ।আর এমন করে থাকতে হলে আপনাকে যা করতে হবেঃ
ক..বউ ছাড়া সবাই খারাপ।
খ..বউয়ের নাকি কান্নায় কাতর হয়ে মা-বাবা,ভাই-বোন সবার সাথে বউয়ের জন্য ঝগড়া করতে হবে ।
গ..বিয়ের কয়েক মাস পর মা-বাবাকে ছেড়ে আলাদা ফ্ল্যাটে উঠতে হবে।
ঘ..মাস শেষে বেতনের সব টাকা বউয়ের হাতে তুলে দিতে হবে।বউয়ের যদি ইচ্ছা হয় তাহলে আপনাকে কয়েকশ টাকা দিবে ।আর যদি না দেয় তাহলে বিড়াল যেমন সবার অগোচরে পাতিলে হামলা দেয় আপনাকেও তেমন বউয়ের ভ্যানিটি ব্যাগে হামলা দিতে হবে।
৩. সবার উপর মানুষ সত্য বিয়ের পর সত্য শশ্বর বাড়ি-এই নীতিতে আপনাকে চরম ভাবে বিশ্বাসী হতে হবে।আপনি যে জান প্রাণ দিয়ে এই নীতিতে বিশ্বাসী এইটা প্রমানের জন্য যা যা করতে হবে।
ক.. বিয়ের পর আপনার বাবা-মার সাথে খালা-খালু,ভাই-বোনের সাথে পাড়াত ভাই-বোন বিপরীতে শ্বশুর-শাশুড়ীর সাথে বাবা-মা আর শালা-শালীদের সাথে ভাই বোনের মত আচরন করতে হবে।
খ.. দুই ঈদে কিংবা পূজায় বউয়ের জন্য শাড়ী গহনার পাশাপাশি শ্বশুর-শাশুড়ি,শ্যালক-শ্যালীকাদের জন্য কিছু না কিনলে আর যাই আসুক আপনার ঘরে ঈদের/পূজার আনন্দ আসবেনা।
গ..বউয়ের ১৪গুষ্টির বিভিন্ন অনুষ্টানে দামী গিফটের পাশাপাশি কামলা দিতে হবে বিনা বাক্যে।
ঘ..শ্বশুর বাড়ির যেকোন সমস্যায় সবার আগে আপনাকে দেখতে চাইবে আপনার গৃহিনী।
৪.. সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে-আবহমান গ্রাম বাংলায় বহুল প্রচলিত এই প্রবাদটিতে আস্তে আস্তে পাল্টে হয়ে যাচ্ছে সংসার সুখের হয় পুরুষের গুনে।সংসারের সুখের জন্য শুধু চাকরি করে টাকা আনলে হবেনা।আরো অনেক কিছু করা লাগবে।
ক..টিভির রিমোট ধরতে পারবেনা।বউ হিন্দী সিরিয়ালের নায়িকাদের সাজগোজ,আবালামীÑছাবলামী থেকে দুঃখের দৃশ্যে দেখার সময় বাচ্ছা যাতে ডিস্টার্ব করতে না পারে সেজন্য বাচ্ছাকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা খেলতে হবে।
খ.. কাজের বুয়া যেদিন আসবেনা সেদিন আপনার বউয়ের মাথা ব্যাথার গ্যারান্টি ১০০%।তাই অফিসে যাওয়ার আগে পিচ্ছির মানে আপনাদের কয়েকমাস বয়সী উলু উলু বাবুটার রাতের হিসুর যত কাথাঁ আছে সব আপনাকেই ধুতে হবে।
গ.. সুন্দরের প্রশংসা করা ছেড়ে দিতে হবে। বউয়ের সামনে সুন্দরী কোন নারীর সামান্য প্রশংসাও করা যাবেনা।যতই নিখুত সুন্দরী হউকনা কেন কোন না কোন খুঁত ধরে বউকে উপরে রাখতে হবে।
ঘ.. বউয়ের কথা যতই আজাইরা প্যাচাঁল হউক না কেন সুবোধ বালকের মত শুনতে হবে।
প্রিয় পাঠক,উপরে এতক্ষন যা পড়লেন সে যোগ্যতা যদি থাকে তাহলে আপনি বিয়ের উপযুক্ত হয়েছেন এবং আপনার দাম্পত্য জীবন বেশ সুখের হবে।সো,আর দেরী কিসের?এখনই খেয়ে ফেলুন সেই ঐতিহাসিক দিল্লির লাড্ডু মানে বিয়ে করে ফেলুন। আর আমাদের সবাইকে দাওয়াত দিতে ভুলবেন না যেন।অন্তত বিবাহ পরবর্তী জীবনে আপনার উপর অত্যাচারের মাত্রা যাতে কম হয় সে ব্যাপারে আল্লাহর কাছে দোয়া তো করতে পারব .........!!!!!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন